THE BEST SIDE OF অপূর্ণ প্রেমের গল্প

The best Side of অপূর্ণ প্রেমের গল্প

The best Side of অপূর্ণ প্রেমের গল্প

Blog Article

সারা দিনের কর্মব্যস্ততায় ক্লান্ত হয়ে মাম রাস্তার ধারে ফুটপাতে বসে পড়লো। একটু স্থির হওয়ার পর আবার বাসস্ট্যান্ডের দিকে পাড়ি দিতে গেলে শেষ বাস টা ওর চোখের সামনে দিয়ে ওকে ক্রস করে পেরিয়ে গেলো । এবার বাড়ি ফিরবে কি করে!

পরের দিন নির্দিষ্ট সময়ে আমরা দল বেঁধে মাঠে পৌঁছে গেলাম। আমরা ঠিক করে নিয়েছি আমরা বিবাহিতদের সাপোর্ট করব। কারণ বিবাহিতদের ক্যাপ্টেন হচ্ছে বড় মামা। আমরা সবাই বড় মামাকে অনেক ভালোবাসি তাছাড়া বড় মামা ফুটবলার হিসেবে টুর্নামেন্ট জিতে অনেক প্রাইজ পেয়েছে। আস্তে আস্তে মাঠে মানুষের ভিড় বাড়তে লাগলো। বড় মামার দলে রয়েছে অন্যান্য মামারা এবং খালুরা। আর মুরাদ ভাইয়ের দলে রয়েছে মামাতো ভাই এবং খালাতো ভাই রা। খেলা শুরুর আগে সবাই এসে আমাদের কাছে দোয়া চেয়ে গেল। ভিড়ের ভিতরে সে এক ফাঁকে সবার অগোচরে এসে আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,” দোয়া করো”। আবারো সেই বুকের ভিতর ঢোল, তবলা,  হারমোনিয়াম বেজে উঠলো। তার সাহসে আমি পুরোপুরি হতভম্ব হয়ে গেলাম।

এদিকে দিশা তখন সেখানে বসে বসে শুধু নিরবেই কান্না করে যাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ যখন সে মাথা তুলে রক্তিমের চলে যাওয়ার দিকে তাকালো’তখনি দেখলো যে রক্তিমের মুখ দিয়ে রক্ত সমানে গড়িয়ে পরছে এবং ওর সারা শার্টে রক্তে ভিজে গেছে। তারপর হঠাৎ দেখে রক্তিম রাস্তায় ধুপ করে পরে গেলো। তা দেখে দিশা সাথে সাথে রক্তিম বলে চিত্কার দিয়ে ওর কাছে দৌড়ে চলে যেতে লাগলো।

আমার আবার বান্ধবী সুমনাকে ছাড়া চলে না, একসাথেই বসেছিলাম আমরা। কিন্তু ম্যাম তাকে ডাকলে সে ম্যামের পাশের সিটে বসেছে। আমার পাশের সীট ফাঁকা পড়ে আছে, কোনো এক আগন্তুকের অপেক্ষায়। আমি বাইরের বাগানটার সৌন্দর্য উপভোগ করছি, আমার ঘোর কাটল তখনই যখন শুনলাম কেউ আমাকে ডাকছে। মাথা ঘুড়িয়ে দেখি, এক সিনিয়র দাদা আমাকে বলছে, সে বসার জায়গা পায়নি। আমার পাশের সীট-তো ফাকাই আছে, আমার যদি কোনো আপত্তি না থাকে, তাহলে সে সেখানে বসতে চায়।  

আসলে ক্ষমা আমার তোমার কাছে চাওয়ার দরকার। আমার জন্যই তোমাদের অনেক প্রোবলেম হয়েছে। আমার জন্য আজকে তোমার খুশির দিনটাই নষ্ট হয়ে গেলো। পারলে আমাকেই ক্ষমা করে দিয়ো। আর আন্টি -আঙ্কেলকে আমার সালাম জানিয়ো চলি।

এর পরের দুই দিন আমি একটু লুকিয়ে লুকিয়ে থাকলাম। পারতপক্ষে তার সামনে পড়তে চাই না বলে খুব সাবধানে চলাফেরা করতাম। তবে আড়াল থেকে তার উপর ঠিকই নজর রাখতাম। খেয়াল করলাম সে তার  সমস্ত কাজের ফাঁকে এদিক-ওদিক তাকিয়ে কি যেন খোঁজেন মাঝে মাঝে। “উনি কি আমাকে খুঁজেন”? এটা ভেবেই আমি শিহরিত হয়ে যাই মনে মনে।

এই বলে রক্তিমের চক্ষ আবার ঝাপসা হতে শুরু করলো।

বাপ মা মরা ফিরোজা খালা গাইল,”জলে ভাসা পদ্ম আমি ….ও আমার সহেলি …..আমার নাইকো কোথাও কোনো ঠাই….”

এক সময় যখন তুমি আমায় দেখে ফেললে তখন আবার নানান কথা ‘যেমন গুন্ডা ‘বখার্টে ‘ছোটলোক আরো কতো কি বলে সবার সামনে অপমান করলে। এক সময় তো তুমি আমাকে ছাত্র -ছাত্রী ভর্তি ক্যাম্পাসে সবার সামনে থাপ্পড়ও মেরেছিলে পুরো ঘটনাটা না শুনে। আসলে আমার কপাঁলটাই খারাপ। আমি যখনি তোমার সামনে ভালো থাকতে চাইতাম ‘ঠিক তখনি কোনো না কোনো কারণে খারাপ হয়ে জেতাম। আর তুমি আমাকে দেখে ভাবতে যে আমি গুন্ডা ‘রাস্তার বখার্টে ছেলে। কিন্তু বিশ্বাস অপূর্ণ প্রেমের গল্প করো এতো কিছুর পরেও আমি যেনো তোমাকে ভুলতে পারছিলাম না তাই সারাক্ষন শুধু তোমার পিছন পিছন লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতাম তোমায়। তবে একদিন তোমার লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে দেখতে হঠাৎ করে দেখলাম যে তুমি রাস্তার মধ্যে মাথা ঘুরে পরে গেলে। তাই সাথে সাথে তোমাকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। তারপর তোমার ফোন দিয়ে তোমার আব্বু- আম্মুকে ফোন করে হাসপাতালে ডেকে পাঠালাম।

আরে নাহ, আন্টি তেমন কোনো ব্যাপার না। আসলে আমার একটু জরুরী কাজ পরে গেছে তো তাই ‘তাড়াহুড়ার মধ্য দিয়ে যেতে গিয়ে হঠাৎ চক্ষে একটা পোকা পড়ে যায়। আর তার জন্যই চক্ষু দিয়ে হালকা পানি পরছে। ওসব কোনো ব্যাপার না। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে। আচ্ছা আন্টি আমি এখন চলি আমার একটু তারাআছে।

পেছন ফিরে তাকালে মনে হয়, স্কুলই একমাত্র জায়গা যেখানে তুমি জীবনের সমস্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারবে।

পরেরদিন আব্বা আমাকে আমার ভাই এবং আম্মাকে নানাবাড়ি মাগুরার বাসে তুলে দিলেন। বিকাল চারটায় নানা বাড়ি পৌঁছে দেখলাম নানি খুবই অসুস্থ। তার স্যালাইন চলছে। মাগুরা থেকে ডাক্তার এসে দিনে ২ বার করে দেখে যান। আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব যে যেখানে ছিল সবাই এসে এসে নানীকে দেখে যাচ্ছে। নানীর সুস্থতার জন্য নানা খতমে ইউনুস পড়াচ্ছেন, সবাই যে যার মতো করে আল্লাহর কাছে নানির সুস্থতার জন্য দোয়া করছে। বাড়ি ভর্তি আত্মীয়স্বজন গমগম করছে, সবারই একটাই চাওয়া আল্লাহর কাছে আল্লাহ যেন আমার নানিকে সুস্থ করে দেন ।

শিউলি মুখ বাকা করে বলল, ” মুরাদ ভাই যে দুষ্ট উনাকে আমার ভাল্লাগেনা ।উনি খুব মারামারি করেন”।

সে নানীর পাশ থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলল, “ঠিক আছে । আমি হাত মুখ ধুয়ে কিছু খেয়ে নিচ্ছি আর ততক্ষণ আপনি বিশ্রাম নেন আবার এসে আমি দেখে যাব”। সে দরজার কাছে এগিয়ে গিয়ে ঠিক বাইরে বের হওয়ার আগ মুহূর্তে ঘাড় বেঁকিয়ে আরেকবার তার সেই তীব্র দৃষ্টিতে আমাকে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়ে বেরিয়ে গেল।

Report this page